গান
ডাঃ কাজল কুমার বক্সী
সেই যে তোমাকে গান শুনিয়ে ছিলাম,
ক্লান্ত মানুষের ভীড়ে ফিরতি পথে ট্রেনের কামরায়।
যখন সরষেরা হলদে জামদানি আঁচল মেলেছে
সীমাহীন প্রান্তরে দলে দলে নিশ্চূপে।
তরতাজা বছর গুলো শুকনো পাতারা নিয়ে গেছে বয়ে,
ডুলুং নদীর ছোট ছোট ঢেউ আজও রোদে চিকমিক্।
রঙ বে রঙ্গের নুড়ীতে নুড়ীতে মৃদু তালের ছন্দ।
ফিন ফিনে মসলিন কুয়াশায় আচ্ছন্ন স্মৃতি।
আমি আজও সেইখানে বসে একাকী সন্তাপে।
সোনালী বালি খুঁড়ে খুঁড়ে জল তোলে মেয়েরা,
নেশাতুর মহুয়া ফুলের উগ্র দম্কা হাওয়া,
পায়রার মাংস আর সাদা হাড়ীয়া সাজানো নিকানো উঠোনে,
হারানো সুরের তরঙ্গ দোলায় নিশ্চল শাল প্রহরীর সারি।
পূজো লেগেছে ন্যাড়া পাহাড়ের চূড়োয় ।
ছোট ছোট লাল ঘোড়া নিয়ে চনমনে মানুষের ঢল,
মিষ্টি রসে ভেজা বড় বড় হলদে জিলিপিরি ঘ্রান
সবুজ পাতায় মোড়া মুচ মুচে সুস্বাদু তেলে ভাজা
আর এই পথেই চলে যায় যত বাহারি ফুল পরী।
অর্ন্তবাহী স্রোত ধারায় কালের সময় মিলায়
কোথাও যেন শুনতে পাই সুরেলা গানের সেই রেশ।
উপুড় করা আকাশে তারা বাজির ফুলকি ছড়ানো
ঝম্ ঝমিয়ে রাতের ট্রেন চলে যায় অন্ধকার ঠেলে।
নুতন করে গান শোনানো হলনা আর তোমাকে,
বিশ্বের হাড় হীম করা ব্যাধির ত্রাস কড়া নাড়ল দুয়ারে
তুমি বললে ''আসছি আমি, তুমি এসো পরে ''
অমানিশার কালো একলা খেলে ডুলুং এর শীতল জলে।
বগুলা ,নদিয়া