Wednesday, February 7, 2024

কালটু

 👨👨কালটু বেশ ভালোই ছিল। টুক -টাক চুরি চামারি করে, যেমন মাঠ থেকে কল ভাঙ্গা,সাইকেল হাপিশ করা, কলা বাগান থেকে কলা কেটে আনা  ইত্যাদি ইত্যাদি। বিড়ি ফুঁকে ,বউ -বাচ্ছা নিয়ে , রেশনের চাল খেয়ে দিন কাটাচ্ছিল। মাঝে মাঝে রুচি পাল্টাতে বউ এর সঙ্গে 
মার পিট করতো।আর সেন্টারিং এর কাজ তো আছেই।

কিন্তু ইদানিং কাল্টূর মনটা ভীষণ খারাপ।মুখ হাঁড়ি করে ঘুড়ে বেড়ায়। ওর শাগরেদরা ওকে বলে , তুই আজকাল কাজে আসছিস না কেনোরে? কাল্টূ খুব  হতাশ সুরে বলে - ভদ্দর লোকেরা যে এত চুরি চামারি করবে ও ভাবতেই পারেনা। আজ কাল ওর মত অরিজিনাল ছোটো খাটো চোরদের কেউ পাত্তাই দিচ্ছে না। থানা ফাঁড়ির সামনে দিয়ে ঘুরে বেড়ালেও  কেউ ওর দিকে তাকাচ্ছেই না।সবাই বড় বড়  চোরদের নিয়ে ব্যস্ত।

ও শালা এই ব্যাপার। বাঁশ কেনো ঝাড়ে ,দে                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                   আমার গাঁ........./।  শোন, একটা ভালো নিউজ আছে। চল সৌদিতে বই লাগাই। ভালো দেবে বলেছে,। কাল্টু  বললো - তাই নাকি। যেমনি শোনা, তেমনি কাজ। ওরা তিনজনে মিলে পরের দিন এজেণ্ট এর কাছে পাস পোর্ট জমা দিয়ে আসলো। মোটামুটি তিন মাসের মধ্যে ভিসা চলে আসলো। মেডিকেল হয়ে গেল। টাকা পয়সা ধার করে প্রায় দেড় লক্ষ টাকা জোগাড় করল.। তারপর  তিন বন্ধু  মিলে একদিন প্লেনের টিকিট কেটে সোজা সৌদি আরবে চলে গেল। কিন্তু কাল্টুর ভাগ্য ভালো হল না , এজেন্ট যে কাজ দেবে বলে ছিলো সেটা না দিয়ে   এক খেজুর বাগানের মালিকের জিম্মায় রেখে কেটে পড়লো। কাল্টু আর কি করবে ?  খেজুর পাড়া, খেজুর গাছের পরিচর্যা করা ,ভেড়া চরানো আর মালিকের ছোটো খাটো ফাই ফরমাশ খাটা কাল্টুর এই গুলিই কাজ।

ঘুরতে ঘুরতে এক দিন এক বাজারে দুটো ছেলের সাথে দেখা হয়ে গেল কাল্টুর।কথায় কথায় সে জানতে পারলো তাদের মধ্যে একজন বাংলা দেশী আর একজন পাকিস্তানি। তারা তাদের নিজের কম্পানী থেকে পালিয়ে এসে কাটা পাস পোর্ট নিয়ে নানান রকম ধান্দা করে অর্থ উপার্জন করে।পাকিস্তানি  আস্তে আস্তে তাকে বললো " বস ,তুমি নাকি হাত সাফাই জানো? তা আমাদের দলে যোগ দেবে নাকি?"

কথাটা শুনেই কাল্টুর মাথাটা হঠাৎ গরম হয়ে গেল। সে বললো এক দম বাজে কথা বলবি না । শালা কাটা মাল। তোরা যে দেশের খাবি সেই দেশেরই সর্বনাশ করবি। কাটা মাল বলাতে সেও রেগে কাঁই। জানি জানি,সব জানি আমরা। তুই দেশে কি করে বেড়াস। কাল্টু তার উত্ত রে জানালো " আমি আমার দেশে কি করছি  না করছি সেটা আমার ব্যাপার .। তোদের দেশে গিয়ে তো হাত পাতছি না।"জেল গুলো তো পাকিস্তানি আর বাংলা দেশীতে ভরতি হয়ে গেছে। যা যা কেটে পড় এখন। ওরা আর কথা না বাড়িয়ে  অন্য দিকে চলে গেল। কালটু খেজুর গাছ পরিচর্যা করতে করতে ভাবতে লাগলো হাতে  টাকা পয়সা জমলেই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বাড়ি ফিরে যাবে। বাড়িতে দুটো খেজুর গাছ  লাগাবে আর শুয়োরের চাষ করবে । লোন করে যে টাকা এনে ছিল কয়েক মাসে তা প্রায় শোধের মুখে। এক দিন ও শুনতে পেল সেই পাকিস্তানি ছেলেটাকে সৌদি পুলিশ তুলে নিয়ে গেছে। শপিং মল থেকে খাবারের প্যাকেট তুলে নেওয়ার জন্য।  

তিন বছরের মাথায় কাল্টু বেশ কিছু টাকা পয়সা জমিয়ে বাড়ি ফিরে আসলো। কথা মত বাড়িতে দুটো সৌদি খেজুর গাছ লাগালো। এক টুকরো জায়গা কিনে শূয়োর চাষে মন দিল। কাল্টু এখন ছোটো খাটো চুরি চামারির কথা ভুলেই গেছে। বউ বাচ্চা নিয়ে বেশ ভালোই আছে আজকাল। প্রবাস জীবন তাকে অনেক স্বাচ্ছন্দ্য এনে দিয়েছে । দেশে থাকলে হয়তো অন্য খাতে  জীবন বইতো তার।

আমাদের দেশে এই রকম হাজার হাজার কালটু আছে যারা তাদের কঠিন প্রবাস জীবনের বিনিময়ে নিজেদেরকে সমৃৃদ্ধ করেছে  দেশকে সম্পদশালী করেছে । আমরা কি তার খোঁজ রাখি?






Sunday, December 3, 2023

জীবনের অঙ্ক।

তিতিক্ষার শেষ লগ্নে এসে ,সাদা একটা ফ্লাগ উড়িয়ে সারা জীবনের সমস্ত সঞ্চিত সম্পদ স্কুলে উজাড় করে দান দিয়ে, স্টেশনে এসে আমাদের স্বনামধন্য প্রণম্য মাস্টারমশাই  বললেন, "আমি চললাম, কোন মহাসাগরের তীরে কিম্বা কোন সাধুর আঁখড়ায়, ভস্ম মেখে যোগাসনে বসে কাটিয়ে দেবো বাকিটা জীবন। তোমরা গ্রামে ভলো ভাবে থাকো"। ভাবতে যেন কেমন লাগে। হাতে বেত নেই, চকডাস্টার নেই, নেই কোন ছাত্র-ছাত্রী সামনে বসা।কাধের পাশে ঝুলছে একটি ঝোলা ,তার ভিতরে পেনশনের বই আর একটি গীতা। কেউ যেন পাশ থেকে ফিসফিস করে বলল ,"মাস্টার মশাই কোথায় চলেছেন ?আনমনা হয়ে মাস্টারমশাই বলেই ফেললেন ,কেন স্কুলে ।সম্বিত ফিরতেই আবার গলা বাড়িয়ে বললেন বিদ্যালয়ে নয় বৃদ্ধাশ্রমে চলেছি। স্যার আপনিও সাদা ফ্লাগ উড়ালেন? যোগ বিয়োগে ভুল হয়ে গেছে ভাই।  "শুনেছি আপনি যেখানে যাবেন সেটা আপনারই প্রিয় ছাত্রের গড়া বৃদ্ধাশ্রম"। সেখানে ওনার মা-বাবাও থাকেন।তাই বুঝি? মাস্টারমশাইয়ের সবকিছু কেমন যেন গুলিয়ে গেল । মাথাটা ঝিমঝিম করছে। তার পাশের সিটেই বসা গুজরাটি সাধু বলে উঠলো "ভেগে আয় বেটা, ভেগে আয়"। আমার সঙ্গে সাথ সাথ চল  ।  পবিত্র গঙ্গায় ডুব দিবি একবার। শান্তি পাবি। সংসার  ঝুট হ্যায় ব্যাটা। স্যারের সামনে বহু স্মৃতি ভেসে উঠলো। মাথার ভিতরে ভনভন করছে । চোখে দেখতে পেলেন নানা রকম জ্যামিতিক চিত্র । সংখ্যাগুলো যেন ভেসে ভেসে বেড়াচ্ছে কালো ব্ল্যাকবোর্ডের উপরে। আমাদের অতি প্রিয় অংকের মাস্টারমশাই ট্রেনের হুইসেল বাঁজতেই এক লাফ দিয়ে ট্রেনে উঠে বসলেন । আর দেখতে পাওয়া গেল না। জীবনে সবার অংক সব সময় মিলে যাবে এটাতো ✅ নয়। অঙ্কের স্যার ও এটা ভাবেন নি। স্ত্রী হারা মাস্টার মশাইয়ের বাড়ি ছাড়তে বেশী

বেগ পেতে হয়নি। ভেবে ছিলেন আদরের বড় ছেলে গ্রাম এর বাড়িতে ফিরে আসলেও আসতে পারে। কিন্তু সে গুড়ে বালি। ফোনে জানিয়েছেন, "বাবা গ্রামের অবস্থা ভালো নয় ,নিত্য খুনো- খুনি  ।তোমার নাতি  ওখানে নিরাপদে থাকতে পারবে না। তাছাড়া গ্রামের মাতবররা আমার উপস্থিতি মেনে নাও নিতে পারে। আমার যে একটু সম্মান টম্মান আছে । তুমি যেমন খুশি তেমনি থাকো। 

মাস্টারমশাই এতক্ষণে নৈহাটি পৌছে গেছেন আর সাধু বাবার সাথে বেজায় গল্প করছেন। এবার অংক মিললেও মিলতে। পারে। 

ডাক্তার কাজল কুমার বক্সী ।বগুলা। 

নদীয়া। 3/12/23





Monday, November 13, 2023

ছায়া

 ডাঃ কাজল কুমার বক্সী💖💖


টান টান এক প্রলম্বিত কালো ছায়া প্রকাশ্য রাজ পথে শুয়ে।দোমড়ানো পাকানো সরু একটা মানুষ তাকিয়ে আছে নীচে বিপরীতে। কাকে যেন চিনে নিতে, বুঝে নিতে চাইছে।কত শত জীবনের হারানো টানা -পোড়েন।অকথ্য অত্যাচারের পান্ডূলিপিতে আথালি-পাথালি চোখ বারে বারে ফেরে।বিশ্বাস ঘাতকদের নখের আঁচড়ে ক্ষত বিক্ষত তাঁর  ছায়ার অবয়বে।মানুষটি কি চিনতে পারছে  তাঁর প্রতিবিম্বকে। মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে শরীরের ভাষায় সেটা বোঝা যাচ্ছে।ছায়াটা যে তাঁরই ,তবে পঞ্চাশ বছরের পুরাতন জরাজীর্ণ এক রৌদ্র ছায়া। আজকে চওড়া এক রাজ পথে একা অপেক্ষায় ।আজকে নীতা আসবে । আর তাঁর ক্লেদাক্ত ছায়া দেহ এক নিমেষে হারিয়ে যাবে অজানা কোনো ছায়া পথে।💕💕



সুন্দর বন
বাঁকুড়া



Sunday, November 5, 2023

জীয়ন কাঠি

 জীয়ন কাঠি


     জীয়ন কাঠি জীয়ন কাঠি

ছোঁয়াও দেখি একবার,

ঘুমের থেকে উঠে দেখি

কেমন আছে চরাচর।




সকাল বেলা জানলা খোলা

ঘুঘু ুডাকে বারে বার,

শালিক খায় দানা ছোলা

শিউলি ছড়ায় গন্ধ তার।


কাজের মাসি আসলো ভোরে

কুকুর করে চিৎকার,

থালা বাসন ভাতের হাঁড়ি

নোংরা জলে একাকার।


জীয়ন কাঠি জীয়ন কাঠি 

জাগাও দেখি একবার,

নুতন করে বাঁচতে শিখি

হাসতে থাকুক আপন পর।



ডা; কাজল কুমার বক্সী

বগুলা, নদীয়া,

৩/১১/২০২৩









Monday, August 14, 2023

শুভ সংবাদ।

শুভ সংবাদ

শুভ সংবাদ, শুভ সংবাদ ।আগামি কাল আমাদের মাননীয় মন্ত্রী মহোদয় শ্রী যুক্ত সুখ বিলাস পন্ডিত  এই গ্রামে পদার্পন  এবং গ্রাম পরিদর্শন করিবেন। মাননীয় মন্ত্রী মহাশয়েরএই শুভ আগমন হেতু এই  গ্রামের সকল রাস্তা ঘাট ,খানা খন্দড় মেরামত এবং রাস্তার দুই পার্শ্বের যত গাছ পালা পরিস্কার করা হইবে। গ্রাম বাসীর যাতায়াত এর অসুবিধা ও সার্বিক কল্যানের কথা ভেবে আমরা আজ রাত্রেই সুদুর বহরম পুর থেকে ভুতেল শ্রমিক আনয়ন করিয়া  সমস্ত কাজ সম্পন্ন করিবো। অতি প্রত্যুষে মন্ত্রী মহোদয়ের গতি পথ গঙ্গা জল দিয়া ধৌত ও শুদ্ধি করণ করা হইবে। আশা করি আপনারা এই কাজে আমাদের সঙ্গে সম্পূর্ন সহযোগিতা করিবেন।
শুভ সংবাদ শুভ সংবাদ........................।
আপনাদের আরো জানানো যাইতেছে যে আমাদের মাননীয় মন্ত্রী মহোদয় গ্রামে পাঁচটি শৌচালয় উদ্বোধন করিবেন ও গ্রাম বাসিকে বিশেষ ভাবে পুরস্কার দিয়া সম্নানিত করিবেন।আমরা এই বিশেষ দিনটিকে স্মরন রেখে এক বিরাট সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের ব্যাবস্থা করিয়াছি । অনুষ্ঠানের প্রথমে রবীন্দ্র সংগীত , দুপুরে হিন্দি এবং সন্ধ্যায় বিহার থেকে আগত ভোজ পুরী শিল্পীর সংগীত পরিবেশিত  হইবে।
 আরো জানানো যাইতেছে যে, যাহাদের গৃহে পুষ্প উদ্যান রহিয়াছে তাঁহারা দয়া করিয়া পুষ্প চয়ন করিয়া রাখিবেন।মাননীয় মন্ত্রীর শুভ যাত্রা কালে  সকলে মিলিয়া পুষ্প বৃষ্টি  করিবেন এবং উলুধ্বনি ,শাঁখ বাজাইবেন।
শুভ সংবাদ, শুভ সংবাদ............।।
ও ভাইপো ....।তুমি একটু দাঁড়াবে । কাকা আমাকে ভাইপো বলবেন না ,ভাইপো বললে এখন অনেক কিছু বোঝায়। বলবেন ভাইব্যাটা।
কি বলছিলেন কাকা?
বলছি তুমি মাইকে বললে মন্ত্রী মহোদয় গ্রামে আসবেন, শুনে খুব ভালো লাগলো,তারপরে শুনলাম শৌচালয় হবে সেটাও ভাল । কিন্তু শৌচালয়ে গ্রামের মানুষ পায়খানা করবেতো?
-কাকা ,সেটা পরে দেখা হবে। আর একটা কথা বলছি , অনুষ্ঠান শেষ কি বাংলা জল পাওয়া যাবে তো?
কাকা সব পাওয়া যাবে।এপার বাংলার জল ওপার বাংলার জল সব থাকবে। দুই বাংলা মিলে মিশে এখন একাকার ।
-তার পর ভোজপুরী নৃত্য কি ব্যাটা ছেলে নাকি মেয়ে ছেলে করবে?
- কাকা, ব্যাটাছেলে করবে কেন? মহিলারা করবে। কিন্তু কাকা তুমি লুঙ্গি ভালো করে বেঁধে যেও ,বলা তো যায়না লুঙ্গি খুলে যেতে পারে।
যাও ভাইব্যাটা এগিয়ে যাও।
মন্ত্রী মহোদয়ের ভাষন পরের  রবিবার লেখা হবে।

 






Saturday, August 5, 2023

বাংলা দেশের প্রেমিক।

 - এই দাঁড়া দাঁড়া।তুই  এদিকে আয় ,এদিকে আয়।💔💔

এই বর্ডারের রাস্তা দিয়ে তুই কোথায় যাচ্ছিস? চেনা চেনা মনে হচ্ছে না তো! তুই কি ইন্ডিয়ান?

-না স্যার আমি ইন্ডিয়ান না। আমি একজন বাংলা দেশী নাগরিক।

বলিস কিরে? তোর পাস পোর্ট আছে। 

-না স্যার আমার কোনো পাস পোর্ট নেই ।

-কি সর্বনাশ! হাত উচু কর, হাত উচু কর।

- এদিকে আয় তাড়া তাড়ি ,তল্লাসি করবো ।

- স্যার আমার কাছে কিছুই নাই। কতোগুলা কলা আর এক হাজার টাকা আছে।

- তাইতো দেখছি।

তুই হিন্দু নাকি মুসলমান?

স্যার আমি হিন্দু ও না ,মুসলমান ও না ।

-তবে কি তুই?

স্যার আমি এক জন বাংলা দেশী প্রেমিক।

শালা, গুল মারার আর জায়গা পাসনি। পাছায় বাড়ি পড়লেই প্রেমিক বলা ছুটে যাবে।বাংলা দেশের কোথায় বাড়ি বল?

- স্যার যশোরের সুলটিয়া আমাদের বাড়ি।

- এখানে কিসের ধান্দায় এসেছিস ? ঠিক করে বলবি।নইলে......।

ওইতো স্যার প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে ।

বিনা পাসপোর্টে তুই প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিস, তোর সাহস তো কম না।

কিভাবে আসলি বল ?

- স্যার দালাল ধরে। কিন্তু স্যার দালাল আমার সঙ্গে বেইমানি করেছে। দালাল বললো তুই এই পথ দিয়ে চলে যা আমি পরে আসছি। এখানে আসার পর দেখি পিছনে দালাল নাই।

আবার গুল মারছিস। হাবিলদার ডান্ডা লে আও।

- না স্যার আমি ঠিক বলছি। আল্লাহর কসম।

এইতো, তুই  মুসলমান আছিস। হারামি কোথাকার।

ভাবছিলাম কলা গুলো খাবো কিন্ত এখন আর খাওয়া যাবে না।

- তোর প্রেমিকার সঙ্গে কি করে যোগাযোগ হলো বল? কত দিন ধরে  প্রেম চলছে ?

স্যার ফেস বুকের মাধ্যমে আমাদের সঙ্গে প্রথমে যোগাযোগ হয়। এখন প্রায় পাঁচ বচ্ছ র আমাদের প্রেম চলছে।

- তা তুই পাস পোর্ট করে আসলি না কেন?

-স্যার ধরা পড়ে যেতে পারি এই ভয়ে। ভারতে অনেকেই এখনো দালাল ধরে আসে।

একদম চুপ্‌ , আমাকে দালাল চেনাচ্ছে! 

- তোর প্রেমিকার নাম বল। বাড়ি কোথায়? মোবাইল নাম্বার দে।

- তার বাড়ি স্যার চেতলায় হিজড়ে পট্টিতে । মোবাইল নাম্বার হলো ২৩২৩৪৫৪৫৬৮। নাম শান্তনা মন্ডল।

-  হাবিলদার সাহেব ফোন লাগান ম্যাডামকে।

- জরুর সাব , ফোন দিচ্ছি।

- হ্যা স্যার ধরুন, রিং হচ্ছে।

- হ্যালো ম্যাডাম , আমি কলাগাছি বর্ডার পোস্ট থেকে বলছি, কমান্ডার সাহেব।

- হ্যা হ্যা বলুন স্যার।

- বলছি বাংলাদেশে আপনার কোনো পরিচিত লোক আছে?

হ্যা স্যার অবশ্যই আছে। আমার লাভার আছে। ওর নাম মকবুল। ওর আজকেই ভারতে আসার কথা আছে।

কিন্তু কেনো স্যার ?

মকবুল আমাদের হাতে ধরা পড়েছে। বিনা পাস পোর্টে ভারতে এসেছে। ওকে আমরা এক্ষূনি থানায় হ্যান্ড  ওভার করবো।

- না-না- স্যার ওকে থানায় পাঠাবেন না। যত টাকা লাগবে আমি দিতে রাজি আছি।

- ম্যাডাম আপনি কিন্তু বাজে কথা বলছেন। আমাকে কি আপনি ঘুষ দিতে চাইছেন? প্রোয়োজনে আপনাকেও তুলে নিয়ে আসবো। কার সঙ্গে কথা বলছেন একটু খেয়াল রাখবেন ম্যাডাম। বাই দি বাই ,আপনি ওখানে কি করেন? 

-স্যার আমি কি করি সেটা মকবুল কে বলা যাবে না।ও তাহলে কষ্ট পাবে। তবে আপনাকে আমি বলতে পারি।

- ঠিক আছে আপনি বলুন । ভয়ের কিছু নেই।

-- স্যার আমিও একজন বাংলাদেশী কিন্তু এখন আমি ভারতীয় । প্রায় সাত বছর আছি এখানে। সব কাগজ পত্র বানিয়ে নিয়েছি। আর পেটের দায়ে হিজড়া হয়েছি। তবে আমি আগে পুরুষ মানুষ ছিলাম।

আচ্ছা আচ্ছা তার পর কি করে হিজড়া হলেন।

- কি ভাবে আর, এখানে এক ডাক্তার বাবু আছেন ,উনিই অপারেশন করে হিজড়া বানান। ২৫ হাজার টাকা দিলেই হলো।

-শালা নেমকহারাম ,ভালোইতো ধান্দা বেছে নিয়েছিস। তোকে পরে দেখছি।

- গাল দিবেন না স্যার। দেশের বাড়িতে বাবা মা অসুস্থ  ছিল, তার পর বাড়ি ঘর সব ভাঙ্গনে খেয়ে নিলো।

বাঁচার জন্য কিছু তো করতেই হবে স্যার।

- তাহলে তুই কেনো মকবুল কে ফাঁসালি?

- আমি ফাঁসাইনি সাব। ওইই আমার প্রেমে পড়েছে। অনেক বার বলেছি , বুঝিয়েছি কিন্তু ওই ড্যামনা কিছুতেই বোঝেনা। শুধু বলে আমি তোমার কাছে যাবো।

- এই মুখ সামলে কথা বলবি। তোর প্রেম করা ঘুচিয়ে দেবো।

-স্যার আপনাকে বাপ বলছি মুকবুলকে ছেড়ে দিন। তাছাড়া মকবুলকে ও হিজড়া বানাবো ভেবেছি। কাগজ পত্র বানিয়ে দেবো চিন্তা নেই।

- ব্যাটা বদমাস। 

 স্যার গাল দিবেন না। তাহলে আমরা হাত্‌ তালি দিব আর আভিশাপ দিব। আপনার ছেলে মেয়ের অমঙ্গল হবে।

- চুপ্‌ কর হারামখোর। এমন পিটাবো দেখবি ...। ফোন ছাড় শালি।

- স্যার শান্তনা কি বললো?

- তোর মাথায় কি আছেরে মকবুল ? গরু  খেয়ে খেয়ে তুই একটা আস্ত আবাল হয়েছিস। শালা হিজড়ের প্রেমে হাবু ডুবু খেয়ে নদী সাঁতরে সোজা ভারতে চলে এসেছিস। সঙ্গে আবার কলা। বউকে কলা খাওয়াবি আদর করে নাকি?

হাবিলদার সাহেব মকবুল কে থানায় পাঠাতে হবে । গাড়ীতে  ওঠান ।

- কি বলছেন স্যার শান্তনা হিজড়ে? আমারতো সব সর্বনাশ হয়ে গেল স্যার। আমাকে জেলে পাঠাবেন না স্যার । আপনার হাতে পায়ে পড়ছি।  আমি কি করে বাঁচবো স্যার।

- হাবিলদার সাব কিছু বলবেন?

- বলছিলাম স্যার ,হিজড়াদের অভিশাপ ভালোনা। কখন কি হয়। ওকে ছেড়ে দিলেই ভালোহবে সাব।

আপনাকে কিছু ভাবতে হবে না। যা করার আমিই করবো । ঝামেলা বাড়িয়ে লাভ নেই। বেচারা একে ঠকে গেছে। 

 বলছেন? এই শোন মকবুল ,আবার কখনো যদি হিজড়ের প্রেমে পড়েছিস আর ভারতে বিনা পাস পোর্টে এসেছিস তোকে এমন মার মারবো তখন বুঝবি। যা ভাগ। বাংলা দেশী প্রেমিক।

হাবিলদার সাহেব ওকে বি ডি আর কাছে  পৌছানোর ব্যাবস্থা করুন । আমি সব ব্যাবস্থা করছি।

মকবুল ফ্যাল ফ্যাল  করে আকাশের দিকে চেয়ে থাকলো  অনেকক্ষন। চোখ দিয়ে টপ টপ করে জল পড়তে পড়তে ঝাপসা চোখে গাড়িতে উঠে বসলো।তার স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার আজ। যাওয়ার সময় কলা গুলো দিয়ে বললো" কলা গুলো আপনারা যদি খান তাহলে আমি সবচেয়ে খুশি হবো স্যার।

মকবুলের প্রেমের কোনো দোষ ছিল না। সীমানারও কোনো প্রতিবন্ধকতা ছিলনা । ছিলো শুধু  সমাজ ব্যাবস্থার অবক্ষয়ের ও জড়তার ছবি।👮👮

ডাঃকাজল কুমার বক্সী।

বগুলা, নদিয়া,

৫/৮/২০২৩
















-




Sunday, July 23, 2023

বউ

 ও আপন ভোলা নদীরে তুই

আয়-আয়-আয়।

ঘোমটা দিয়ে আমার বউটি আমার👩👩

যায়-যায়-যায়।

ও হলদে পাখি একটি বার,🐦🐦🐦

ডাক-ডাক-ডাক।

 ওই দেখা যায় চিকিয়ে ওঠে,

নাক-নাক-নাক।👃👃

বউটা আমার উদাস হল,

হায়-হায়-হায়।

নদীর পাড়ে ডাহুক চরে,

পায়-পায়-পায়..।

বুকের মধ্যে বাদ্যি বাজে,

ধক-ধক- ধক।

বউ ফিরে করলো শুরু,

বক-বক-বক।💓💓

বউ -বউ-বউ 


ডাঃ কাজল কুমার বক্সী

বগুলা, নাদিয়া,

২৩/৭/২০২৩/






ভোটা চাটনি

ভোটা চাটনি চাই গো ,ভোটা চাটনি চাই?  ও ভাই , ভোটা চাটনি কি? ওই চাটনির তো কখনো নাম শুনিনি। দাদা এই চাটনির অনেক গুন, একবার খেয়েই দেখুন না কিরক...