Thursday, April 11, 2024

ভোটা চাটনি

ভোটা চাটনি চাই গো ,ভোটা চাটনি চাই? 
ও ভাই , ভোটা চাটনি কি? ওই চাটনির তো কখনো নাম শুনিনি।
দাদা এই চাটনির অনেক গুন, একবার খেয়েই দেখুন না কিরকম ভালো লাগে।
খেলে কি হবে?
-- এই চাটনি খেলে একবার আপনি পাঁচ বছর ধরে যাকে ভোট দেবেন বলে ভেবেছেন, তার কথা ভুলে গিয়ে আমাকেই ভোটটা দিয়ে দেবেন। ওখানে আমার এই বিশাল গোঁফ ওয়ালা মুখ দেখেতে পাবেন আর তার পাশে আমার নাম ভোটা চাটনি ওয়ালা ভুল ভালাইয়া থাকবে।
-- কি বলছো কী ? এতো বিশাল ষড়যন্ত্র! কেন্দ্রের না রাজ্যের ? 
এটা কেবল মাত্র আমার  তৈরী চাটনি ।
তাহলে তো পুলিশ কে বলতে হয় , তাইনা?
-- সে আপনি বলতে পারেন। তবে পুলিশ যদি এই চাটনি একবার খেয়ে ফেলে তবে আর রক্ষে নেই। তাহলে পুলিশ আমাকে না  ধরে আপনাকে ধরে নিয়ে যাবে। অর্থাৎ   জেলে থাকবে মালী , বাইরে  থাকবে জালি । জনগনের পকেট খালি।
-- তাই  ?
 তাহলে কমিশন কে বলবো ।
  -- সে তো আরো মজা হবে। চাটনি খে্লেই সে গান গাইতে থাকবে ।
আয়রে ভোটা আয় , ভোট দিয়ে যা ,
ভোটের কপালে ভোট ছাপ দিয়ে যা।
ভোট দিলে রাজা পাবি, ভোট দিলে রাণী পাবি,
সারা জীবন সুখে খাবি, চাটনি ওয়ালার চাটনি  পাবি।
-- ভাই  তোমার চাটনির দাম কতো?
একদম ফ্রী । তবে পিঠটা একটু চুল্কে দিলে ভালো হয়। আর বৌদিকে বলবেন আমাকে যেন কয়েকটা পিঠে বানিয়ে খাওয়ায়। এই আর কি? 

-=- দিনে খাবে, না রাত্রে খাবে ? 
-- একটু গভীর রাত্রে হলেই ভালো হয়।
-- শালা, এই দিকে আয় তোর চাটনি  বিক্রি করাচ্ছি ? পিঠে মুগুর দিচ্ছি।
 ( কাল্পনিক সংলাপ) 






-- 




Wednesday, February 7, 2024

কালটু

 👨👨কালটু বেশ ভালোই ছিল। টুক -টাক চুরি চামারি করে, যেমন মাঠ থেকে কল ভাঙ্গা,সাইকেল হাপিশ করা, কলা বাগান থেকে কলা কেটে আনা  ইত্যাদি ইত্যাদি। বিড়ি ফুঁকে ,বউ -বাচ্ছা নিয়ে , রেশনের চাল খেয়ে দিন কাটাচ্ছিল। মাঝে মাঝে রুচি পাল্টাতে বউ এর সঙ্গে 
মার পিট করতো।আর সেন্টারিং এর কাজ তো আছেই।

কিন্তু ইদানিং কাল্টূর মনটা ভীষণ খারাপ।মুখ হাঁড়ি করে ঘুড়ে বেড়ায়। ওর শাগরেদরা ওকে বলে , তুই আজকাল কাজে আসছিস না কেনোরে? কাল্টূ খুব  হতাশ সুরে বলে - ভদ্দর লোকেরা যে এত চুরি চামারি করবে ও ভাবতেই পারেনা। আজ কাল ওর মত অরিজিনাল ছোটো খাটো চোরদের কেউ পাত্তাই দিচ্ছে না। থানা ফাঁড়ির সামনে দিয়ে ঘুরে বেড়ালেও  কেউ ওর দিকে তাকাচ্ছেই না।সবাই বড় বড়  চোরদের নিয়ে ব্যস্ত।

ও শালা এই ব্যাপার। বাঁশ কেনো ঝাড়ে ,দে                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                   আমার গাঁ........./।  শোন, একটা ভালো নিউজ আছে। চল সৌদিতে বই লাগাই। ভালো দেবে বলেছে,। কাল্টু  বললো - তাই নাকি। যেমনি শোনা, তেমনি কাজ। ওরা তিনজনে মিলে পরের দিন এজেণ্ট এর কাছে পাস পোর্ট জমা দিয়ে আসলো। মোটামুটি তিন মাসের মধ্যে ভিসা চলে আসলো। মেডিকেল হয়ে গেল। টাকা পয়সা ধার করে প্রায় দেড় লক্ষ টাকা জোগাড় করল.। তারপর  তিন বন্ধু  মিলে একদিন প্লেনের টিকিট কেটে সোজা সৌদি আরবে চলে গেল। কিন্তু কাল্টুর ভাগ্য ভালো হল না , এজেন্ট যে কাজ দেবে বলে ছিলো সেটা না দিয়ে   এক খেজুর বাগানের মালিকের জিম্মায় রেখে কেটে পড়লো। কাল্টু আর কি করবে ?  খেজুর পাড়া, খেজুর গাছের পরিচর্যা করা ,ভেড়া চরানো আর মালিকের ছোটো খাটো ফাই ফরমাশ খাটা কাল্টুর এই গুলিই কাজ।

ঘুরতে ঘুরতে এক দিন এক বাজারে দুটো ছেলের সাথে দেখা হয়ে গেল কাল্টুর।কথায় কথায় সে জানতে পারলো তাদের মধ্যে একজন বাংলা দেশী আর একজন পাকিস্তানি। তারা তাদের নিজের কম্পানী থেকে পালিয়ে এসে কাটা পাস পোর্ট নিয়ে নানান রকম ধান্দা করে অর্থ উপার্জন করে।পাকিস্তানি  আস্তে আস্তে তাকে বললো " বস ,তুমি নাকি হাত সাফাই জানো? তা আমাদের দলে যোগ দেবে নাকি?"

কথাটা শুনেই কাল্টুর মাথাটা হঠাৎ গরম হয়ে গেল। সে বললো এক দম বাজে কথা বলবি না । শালা কাটা মাল। তোরা যে দেশের খাবি সেই দেশেরই সর্বনাশ করবি। কাটা মাল বলাতে সেও রেগে কাঁই। জানি জানি,সব জানি আমরা। তুই দেশে কি করে বেড়াস। কাল্টু তার উত্ত রে জানালো " আমি আমার দেশে কি করছি  না করছি সেটা আমার ব্যাপার .। তোদের দেশে গিয়ে তো হাত পাতছি না।"জেল গুলো তো পাকিস্তানি আর বাংলা দেশীতে ভরতি হয়ে গেছে। যা যা কেটে পড় এখন। ওরা আর কথা না বাড়িয়ে  অন্য দিকে চলে গেল। কালটু খেজুর গাছ পরিচর্যা করতে করতে ভাবতে লাগলো হাতে  টাকা পয়সা জমলেই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বাড়ি ফিরে যাবে। বাড়িতে দুটো খেজুর গাছ  লাগাবে আর শুয়োরের চাষ করবে । লোন করে যে টাকা এনে ছিল কয়েক মাসে তা প্রায় শোধের মুখে। এক দিন ও শুনতে পেল সেই পাকিস্তানি ছেলেটাকে সৌদি পুলিশ তুলে নিয়ে গেছে। শপিং মল থেকে খাবারের প্যাকেট তুলে নেওয়ার জন্য।  

তিন বছরের মাথায় কাল্টু বেশ কিছু টাকা পয়সা জমিয়ে বাড়ি ফিরে আসলো। কথা মত বাড়িতে দুটো সৌদি খেজুর গাছ লাগালো। এক টুকরো জায়গা কিনে শূয়োর চাষে মন দিল। কাল্টু এখন ছোটো খাটো চুরি চামারির কথা ভুলেই গেছে। বউ বাচ্চা নিয়ে বেশ ভালোই আছে আজকাল। প্রবাস জীবন তাকে অনেক স্বাচ্ছন্দ্য এনে দিয়েছে । দেশে থাকলে হয়তো অন্য খাতে  জীবন বইতো তার।

আমাদের দেশে এই রকম হাজার হাজার কালটু আছে যারা তাদের কঠিন প্রবাস জীবনের বিনিময়ে নিজেদেরকে সমৃৃদ্ধ করেছে  দেশকে সম্পদশালী করেছে । আমরা কি তার খোঁজ রাখি?






ভোটা চাটনি

ভোটা চাটনি চাই গো ,ভোটা চাটনি চাই?  ও ভাই , ভোটা চাটনি কি? ওই চাটনির তো কখনো নাম শুনিনি। দাদা এই চাটনির অনেক গুন, একবার খেয়েই দেখুন না কিরক...